অনুষ্ঠানে বলা হয়, অনুন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশের আনুমানিক ৪২০ কোটি ডলার সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে।
Published : 25 Feb 2025, 05:09 PM
বাংলাদেশের সাড়ে ছয় কোটিরও বেশি মানুষ নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার সুবিধাবঞ্চিত। আর শুধু রাজধানীতেই প্রতিদিন গড়ে ২৩০ টন মানববর্জ্য উন্মুক্ত জলাশয়ে পড়ছে। এতে গুরুতর পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল টয়লেট কনফারেন্স-২০২৫ এ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
দুদিনের এই সম্মেলন শেষ হবে বুধবার। এতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, খোলা জায়গায় মলত্যাগ শিশুদের স্বাস্থ্য ও বিকাশের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। তবে এই ক্ষতিকর চর্চা বন্ধে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত এবং প্রশংসনীয় সফলতা অর্জন করেছে।
“যার ফলে শিশুরা উপকৃত হচ্ছে। কিন্তু গত বছর আমরা দেখেছি, ফেনীর বন্যার মত জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে এসব অগ্রগতি নিমিষে ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে শিশুরা আবার খোলা জায়গায় মলত্যাগে বাধ্য হয়েছে।”
রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, “শিশুদের স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে ওঠার অধিকার রয়েছে। তবে যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে তাদের সুস্থভাবে ও নিরাপদে বেড়ে ওঠা বিঘ্নিত হয়।
“নারী ও শিশুসহ সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতকে সঙ্গে নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া দরকার। সেই সঙ্গে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি বাড়ানো দরকার।”
ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, “এই সম্মেলন কেবল একটি আলোচনা নয়; এটি পুরনো অভ্যাসকে চ্যালেঞ্জ করে। উপযুক্ত ও অত্যাধুনিক সমাধানগুলোকে কাজে লাগানো, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, টেকসই পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাকে অপরিহার্য হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানাই।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলা হয়, অনুন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশের আনুমানিক ৪২০ কোটি ডলার সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই অর্থ ২০১৮ সালের জিডিপির প্রায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে বর্তমানে যে গতিতে কাজ হচ্ছে তা অন্তত আট গুণ বাড়ানো প্রয়োজন।
গেটস ফাউন্ডেশন, কিম্বার্লি-ক্লার্ক, কিংডম অব নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা এবং ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।