Published : 30 Apr 2025, 06:48 PM
সাধারণভাবেই প্রচলিত যে, ভোরে বা সকালে ঘুম থেকে ওঠা ভালো অভ্যাস। তবে গবেষণা বলছে অন্যকথা।
একজন মানুষ দিনের কোনভাগে জেগে উঠে তরতাজা অনুভব করবে, সেটা নির্ভর করে অনেকটাই বংশগতির ওপর। আর এর ওপরেই নির্ভর করবে, মানুষটি ‘সকাল বেলার পাখি’ নাকি ‘রাত জাগা প্যাঁচা’।
অনেকটাই নির্ভর করে বংশগতির ওপর
ঘুম থেকে জেগে ওঠার আদর্শ সময় একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। ঘুম গবেষকরা একে ব্যক্তিগত ‘ক্রোনোটাইপস’ বা ঘুম জাগরণের দেহের স্বাভাবিক অগ্রাধিকারকে নির্দেশ করছেন।
ঘুম বিশেষজ্ঞ এবং বস্টনের ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল’য়ের ঘুম বিজ্ঞানী ডা. রেবেকা রবিন্স এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ কেউ দিনের প্রথমভাবে জেগে উঠে চাঙা বোধ করে; আর সেরা কাজটা দিতে পারে। আবার কেউ কেউ বেলা করে ঘুম থেকে উঠে জীবনীশক্তি ফিরে পায় এবং ভালো মতো কাজ করতে পারে সূর্য ডোবার পরে।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “আমার কথ্যভাষায় এই দুই ধরনকে সকালের মানুষ ও সন্ধ্যার মানুষ (রাতের প্যাঁচা) হিসেবে আখ্যা দিতে পারি।”
আর এই দুই ধরনের মাঝে কিছু মধ্যদিনের মানুষও আছে। তারা হয়ত খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারেন না বা অনেক দেরিতে ঘুমাতে যায়।
গুরুত্বপূর্ণ হল কত ঘণ্টা ঘুমানো হচ্ছে
যদিও একেকজনের শরীর একেকভাবে কাজ করে।
তবে ডা. রবিন্স মন্তব্য করেন- দেখা গেছে সকালের মানুষের চাইতে যারা রাতের প্যাঁচার মতো ঘুম জাগরণে অভ্যস্ত, তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক বেশি।
তারপরও প্যাঁচার মতো মানুষদের স্বাস্থ্যকর ঘুমের বিষয়ে নানান প্রভাবক চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
ডা. রবিন্স বলেন, “সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো হলে কখন ঘুমাতে যাচ্ছে, সেটা কোনো বিষয় না। আর যারা প্যাঁচার মতো জাগে তাদের ক্ষেত্রে সূর্যালোক ও দিনের অন্যান্য আওয়াজ ঘুমের মানের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। আর সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আশপাশের পরিবেশের ওপর।”
যারা সকালে ঘুম থেকে ওঠে তাদের জন্য দিনের প্রথমভাগ উপভোগ করা বিষয় না। আর প্রয়োজনে তারা সকালে উঠতেও পারে। তবে যারা রাতের মানুষ, তাদের জন্য সকালে ওঠাটা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে যায়।
যদি ব্যক্তিগত বা পেশাগত কারণে সকালে উঠতে হয় তবে রাতে আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যেমন- বই পড়া বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা, বিভিন্ন যান্ত্রিক পর্দা থেকে দূরে থাকা, দেরি করে রাতে খাওয়া এড়ানো। আর প্রতি রাতে ১৫ মিনিট করে আগে ঘুমাতে যাওয়া ও সকালে ১৫ মিনিট করে আগে ঘুম থেকে ওঠা।
ডা. রবিন্স পরামর্শ দেন, “ছোট ছোট পরিবর্তনেই অভ্যাস গড়তে হয়।”
ঘুম থেকে ওঠার সঠিক সময় নির্বাচন
যদিও প্রধান লক্ষ্য থাকা উচিত সকালে ওঠা।
তবে ডা. রবিন্স বলেন, “সকালে ঘুম থেকে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমকে বিসর্জন দিতে আমি উৎসাহ দেব না। যখনই সম্ভব হবে ঘুমের সময়সূচীর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। আর গুরুত্ব দিতে হবে ঘুমের মানের দিকে।”
“যথেষ্ট ঘুম দেওয়ার জন্য সময় খুঁজে নিতে হবে। আর সেই সময়ের আগে দেহ শিথিল বা আরাম বোধের জন্য যাবতীয় বিষয়ে নজর দিতে হবে”- বলেন তিনি।
ঘুমের সময়সূচীর ধারাবাহিকভাবে বজায় রাখার ওপর দিনের কার্যকলাপ, মন-মেজাজ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকর বিষয়গুলো নির্ভর করে।
আরও পড়ুন
ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলে কাজের ধরন