Published : 01 May 2025, 08:27 PM
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নুরিতলায় ঢাকামুখী পথে বুধবার রাতে একটি কভার্ড ভ্যান উল্টে গিয়ে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়; যা স্বাভাবিক হতে সারাদিন লেগে যায়।
দুর্ঘটনার পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল; যার রেশ দিনভর সড়কে দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রী ও চালকরা।
প্রায় সাত ঘণ্টা পর সড়ক থেকে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকটি সরিয়ে নেওয়া হলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান হাইওয়ে পূর্বাঞ্চলের পুলিশ সুপার খায়রুল আলম।
তিনি বলেন, নুরীতলায় দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকটি হাইওয়ে পুলিশের রেকার দিয়ে উঠানো সম্ভব হয়নি। অন্য জায়গা থেকে ক্রেন এনে ট্রাকটি সরাতে সময় লেগেছে।
আর দুর্ঘটনার পর সড়কের উভয় দিকে যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ক্রেন স্বাভাবিক পথে ঘটনাস্থলে নেওয়া সম্ভব হয়নি; তবে দুপুরের পর থেকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানান খায়রুল আলম।
পুলিশ জানায়, বুধবার মধ্যরাত থেকে মহাসড়কে যানজটের খবরে সড়কের পাশে পণ্যবাহী ট্রাক-লরি, কভার্ড ভ্যান দাঁড়িয়ে যায়। অপরদিকে তিন দিনের ছুটিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাসড়কে যাত্রীবাহী যানবাহন বৃদ্ধি পেতে থাকলে যান চলাচলে নামে ধীরগতি।
তিনগুণ সময়েও মানুষ যেতে পারেনি নির্ধারিত গন্তব্যে। রোদ এবং বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
বাবাকে ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় যাচ্ছিলেন আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, চান্দিনা থেকে ঢাকা যেতে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা লাগে। সে জায়গায় তিনি দুপুর দেড়টায় বাসে উঠে ঢাকায় পৌঁছেছেন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। পরে তিনি আর ডাক্তারের কাছে যেতে পারেননি।
কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী জহুরুল ইসলাম শান্ত বলেন, “ছুটির দিন হওয়ায় ভোরে সন্তানদের নিয়ে ঢাকা চিড়িয়াখানার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম। ঢাকায় পৌঁছেছি দুপুরের পর। প্রায় পুরো দিনটাই কাটাতে হয়েছে রাস্তায়।
“ইলিয়টগঞ্জ, দাউদকান্দি টোল প্লাজা, ভবেরচর এইসব এলাকায় যানবাহনের গতি ছিল একেবারেই কম। ছোট শিশুদের নিয়ে প্রচণ্ড গরমে কষ্ট পেয়েছি।”
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী কভার্ড ভ্যান চালক আব্দুল মমিন বলেন, “চাইলেই বাসের মতো হুটহাট গাড়ি চালাতে পারি না। ভারী পণ্য নিয়ে ধীর গতিতে যানবাহন চালাতে হয়। যানজটে পড়লে বাসগুলো এলোমেলোভাবে চলাচল শুরু করে যানজট আরও বেড়ে যায়।”
ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী এশিয়া ট্রান্সপোর্ট পরিবহনের চালক টিপু মুন্সি বলেন, পহেলা মে ছুটির দিন এবং পরবর্তীতে শুক্র-শনিসহ টানা তিন দিনের ছুটি পাওয়ায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। এর মধ্যে দুর্ঘটনার কারণে যানজট তৈরি হওয়ায় সারাদিনই ভুগতে হয়েছে।
মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কুমিল্লা দাউদকান্দির মেঘনা গোমতী সেতুর টোল প্লাজায়ও যানবাহনের চাপ বাড়ে। অতিরিক্ত যানবাহনে টোল গ্রহণ করতে গিয়ে সেতুর ওপর চট্টগ্রামগামী এবং বিপরীত দিক থেকে ঢাকাগামী যানবাহনের যানজট তৈরি হয়।
পরে ময়নামতি হাইওয়ে থানা, ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা ও দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার সব পুলিশ সদস্য ও যৌথ বাহিনী সহযোগিতায় যানজট নিরসনের চেষ্টা করা হয়। বিকালের দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
কুমিল্লা ইলিয়েটগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, বুধবার রাত ২টায় চান্দিনা নরিতলা এলাকায় কভার্ড ভ্যান উল্টে যায়। মাঝরাত থেকেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কভার্ড ভ্যানের ওজন ২২ টন। পরে ফেনী থেকে রেকার এনে গাড়িটি সরানো হয়।