১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১
লেখক ও শিক্ষক। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব জেনারেল এডুকেশনের সহকারী অধ্যাপক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। আইসিসিআর স্কলার হিসেবে ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি, গবেষণার শিরোনাম: 'ন্যাশনালিস্ট হেজিমনি ইন অ্যাকাডেমিক কালচার অব প্রি-ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট: এ স্ট্যাডি অন বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান'।
নারীর প্রতি সহিংসতা, নৃশংসতা, সংজ্ঞায়িত-অসংজ্ঞায়িত সকল যৌন নিপীড়ন এবং দঙ্গল-অবজ্ঞা চলার এমন চরমাবস্থায়, স্বৈরাচার হটানো গণঅভ্যুত্থানের গরিমায় ঋদ্ধ বাংলার মেয়েদের প্রতিরোধপ্রত্যয়ী আওয়াজ তুলতে আবারও রাজপথে নামতে হয়েছে— ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; ‘আমার সোনার বাংলায়/ ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’।
প্রতুলের গানের যে সমাজচেতনা, যে রাজনীতিমুখিনতা তা নিশ্চিতভাবেই একটা সমাজ বদলের লড়াইয়ের জন্য প্রাণসঞ্চারী। বাংলাভূমে এমন কোনো আন্দোলন আছে যেখানে তার ‘ডিঙা ভাসাও সাগরে সাথীরে...’ গানটি সোচ্চারে উচ্চারিত হয় না?
আমরা কি চেয়েছিলাম আমলের বদল ঘটলেও, আদলের বদল না ঘটুক? ব্যবস্থা ও বন্দোবস্তের বদল না ঘটুক? বদল না ঘটুক রুচির, সংস্কৃতির ও সংহতির? ক্ষমতার চর্চা ও অপব্যবহারই যদি শেষ গন্তব্য হয়, তাহলে মানুষের মুক্তি ও মুক্তচিন্তার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে কীভাবে?
আমরা ‘আদিবাসী’ (ইনডিজেনাস) শব্দটিকে ‘আদি বাসিন্দা’ (আরলিয়েস্ট মাইগ্রেন্টস) হিসেবে পাঠ করতে ও কাউন্টার দিতে শিখেছি। প্রপাগান্ডা মেশিন বোধহয় এভাবেই কাজ করে। ‘আদিবাসী’ মোটেও আদি বাসিন্দা অর্থে ব্যবহৃত হয় না।
‘মব জাস্টিস’ বিচার নয়, অবিচার; ‘মব ইনজাস্টিস’। ফলে, এই তথাকথিত গণবিচারকে শেষ পর্যন্ত বিচার বহির্ভূত হামলা কিংবা হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যে সংঘটিত হামলা হিসেবেই আমাদের পাঠ করতে হবে, যা মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।
গ্রেট ডিক্টেটরই বলি বা হীরক রাজা, তারাও হয়ে উঠেছিলেন ফ্র্যাঙ্কেস্টাইন এবং হয়েছিলেন নিজেদের ধ্বংসের কারণ। বাংলাদেশের জনগণ দুই হাজার চব্বিশে সেই ফ্র্যাঙ্কেস্টাইনকে ধ্বংস করেছে, এটা দৃশ্যত সত্য। তবে, সেই ধ্বংসের সুযোগ ফ্র্যাঙ্কেস্টাইন নিজেই তৈরি করে দিয়েছিলেন।