গত রোববার এক সেমিনারে টেলিকম খাতের বিনিয়োগে শুল্ক কমানোর পক্ষে মন্তব্য করেন গভর্নর। তার ওই মন্তব্যের পরের দিনই খাতটিতে লেনদেন বেড়ে গেল।
Published : 13 Jan 2025, 06:47 PM
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনে ‘হঠাৎ’ শীর্ষে উঠে এসেছে টেলিকম খাত।
টেলিকম খাতের উত্থানের দিনে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বাড়লেও কমেছে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স।
এদিন সূচক কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ১৫১ পয়েন্টে; লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৯৭ কোটি ৮১ টাকায়।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ১৫৬ পয়েন্ট; আর লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৭১ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় কার্যদিবসে একক খাত হিসেবে সর্বোচ্চ ৪৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয় টেলিকম খাতের কোম্পানিগুলোয়, যা মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৬ শতাংশ।
গত রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর টেলিকম খাতের বিনিয়োগে শুল্ক কমানোর পক্ষে মত দেন।
তিনি বলেন, “টেলিকম খাতে আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। নইলে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পাওয়া যাবে না; কলড্রপ হবে। এটি নীতিমালা করে সম্ভব না, প্রয়োজন বিনিয়োগ।“
তার এই মন্তব্যের পরের দিনই টেলিকম খাতের তালিকাভুক্ত তিনটি কোম্পানির মধ্যে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের শেয়ার দর বাড়ল দুই টাকা ৪০ পয়সা; গ্রামীণফোনের বাড়ল চার টাকা ১০ পয়সা।
কয়েক মাস ধরেই লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষস্থানগুলো ধরে রেখেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত, আর্থিক খাত এবং বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। টেলিকম খাতের অবস্থান সাধারণ ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে থাকে। টাকার পরিমাণে তা ৩০ লাখ টাকা থেকে ৪০ লাখ টাকার ঘরে থাকে।
গত সপ্তাহে এ খাতের লেনদেন হয় ৩৩ লাখ টাকার ও তার আগের সপ্তাহে ছিল ৪০ লাখ টাকার। কিন্তু সোমবার টেলিকম খাত লেনদেনে শীর্ষ স্থানে চলে আসে।
টেলিকম খাতে বিনিয়োগ তুলনামূলক নিরাপদ। এসব শেয়ারে সব সময়ই রিটার্ন হয় দেখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা টেলিকম খাতে লেনদেন বাড়িয়েছেন বলে মনে করছেন ইবিএল সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "এরা মার্কট মুভার শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সবসময়ই এ খাতে আগ্রহ থাকে। লেনদেন বৃদ্ধিতে ডিএসই সূচকেও প্রভাব ফেলেছে। এ কারণে সকাল থেকেই বাজার ভালো ছিল। অন্যান্য শেয়ার কেনা-বেচা কম হওয়ায় সূচক শেষের দিকে একটু নেগেটিভ হল।’’
লেনদেন তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গ্রামীণফোনের শেয়ার দর গত এক মাসে বৃদিধ পেয়েছে ২৪ টাকা ৮০ পয়সা বা ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। এ খাতের সবশেষ তালিকাভুক্ত রবির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে দুই টাকা ৬০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
সোমবার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্যাংক খাতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর ৪০ কোটি ৬০ লাখ টাকা লেনদেন করে তৃতীয় স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত।
অধিকাংশ শেয়ার দর হারানোর দিনে ব্লক মার্কেটে ২৫টি কোম্পানির ৩০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এর মধ্যে বস্ত্রখাতের মুন্নু ফ্যাব্রিক্সে লেনদেন হয় ১৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার।
ডিএসইর লেনদেন তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ৪০০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বাড়ে ৯১টির, কমে ২৪৭টির। অপরিবর্তিত ছিল ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দর।
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মুন্নু ফ্যাব্রিক্সের। একদিনের ব্যবধানে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির সার্কিট ব্রেকার অর্থ্যাৎ ১০ শতাংশের কাছে শেয়ার দর বৃদ্ধি পায় মূল বাজারে।
আগের দিনের চেয়ে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়ে সবশেষ হাতবদল হয় ১৭ টাকা ৭০ পয়সায়। এরপরই শেয়ার দর বাড়ে সিভিও পেট্টোকেমিক্যাল রিফাইনারি ও খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রির।
এদিন সবচেয়ে বেশি দর হারায় পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনারেশন নেক্সট ও রতনপুর স্টিল মিলস লিমিটেড।