‘বল উঁচিয়ে মাঠ ছাড়ছি, লোকে তালি দিচ্ছে… এসবে কতটুকু পার্থক্য হয়, লোকে কতদিন মনে রাখে?’, প্রশ্ন রাভিচান্দ্রান অশ্বিনের।
Published : 15 Jan 2025, 01:07 PM
গ্যালারিভরা লোকে তালি দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানাচ্ছে, তালি দিচ্ছে। এসবের মধ্যে ব্যাট বা বল উঁচিয়ে, হাত নেড়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া। অবসরের মুহূর্তটি নিয়ে এমন দৃশ্য কল্পনা করে রাখেন অনেক ক্রিকেটারই। মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারাকে আদর্শ মনে করেন প্রায় সবাই। কিন্তু রাভিচান্দ্রান অশ্বিনের ভাবনা এখানে আলাদা। মাঠ থেকে বিদায় নেওয়া আর না নেওয়ার পার্থক্য তার কাছে খুব একটা নেই।
অশ্বিন যা বলছেন, নিজেও সেটি করে দেখিয়েছেন। গত মাসে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির তৃতীয় টেস্ট শেষে অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে নিজে হাজির হয়ে ছোট্ট করে অবসরের ঘোষণা দিয়ে ইতি টেনেছেন তার সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের ইতিহাসের দ্বিতীয় সফলতম বোলার, অনেক রেকর্ড আর অর্জনে টইটম্বুর যার ক্যারিয়ার, তার বিদায়টা মাঠ থেকে হতে পারত কি না, এটা নিয়ে তখন থেকেই আলোচনা হয়েছে অনেক। এবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে উত্তরটা নিজেই দিলেন তিনি।
“বল উঁচিয়ে মাঠ ছাড়ছি আর লোকে তালি দিচ্ছে, এতে কতটুকু পার্থক্য গড়া হয়? কতদিন লোকে এটা নিয়ে কথা বলবে? সামাজিক মাধ্যম যখন ছিল না, লোকে এটা নিয়ে কথা বলত আর সপ্তাহখানেকের মধ্যে ভুলে যেত।”
“আয়োজন করে বিদায় নেওয়ার প্রয়োজন দেখি না আমি। খেলাটা আমাদেরকে অনেক দিয়েছে এবং আমরা অনেক আনন্দ নিয়ে খেলেছি।”
হুট করে তার এমন বিদায় অনেককেই চমকে দিয়েছে। তবে অশ্বিন বললেন, নিজের কাছে নিশ্চিত হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
“আমি অনেক ভাবতে পছন্দ করি, জীবনে কী করা উচিত। সবারই বোঝা উচিত, এসব ব্যাপার সহজাতভাবেই চলে আসে। কেউ যদি অনুভব করে তার দায়িত্ব শেষ… সেই ভাবনা যখন চলে আসে, এরপর আর ভাবনার কিছু থাকে না। লোকে এটা নিয়ে অনেক কথাই বলেছে। আমার কাছে এটা বড় কোনো ব্যাপার নয়।”
“আমি প্রথম টেস্টে খেলিনি (বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে)। দ্বিতীয় টেস্টে খেলেছি, তৃতীয়টিতে খেলিনি। পরেরটিতে হয়তো খেলতে পারতাম, হয়তো পারতাম না। আমার ভেতরে সৃষ্টিশীলতার একটি দিক আছে এবং সেটা অন্বেষণ করছিলাম। তখন আমার মনে হয়েছে, সৃষ্টিশীলতা শেষ হয়ে গেছে। কাজেই, থেমে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। ব্যস, এতটাই স্বাভাবিক ছিল।”
অবসর নিয়ে সেই চিরন্তন কথাটিও আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন অশ্বিন, “কেন চলে যাচ্ছো না, এটা শোনার চেয়ে সবসময়ই ভালো যে কেন এখনই যাচ্ছো…।”